skip to Main Content

হত্যা করা হয়েছে যেসব বিখ্যাত নেতা ও মানুষদের!

মহাপুরুষদের হত্যা কেন করা হয়?

আঘাত কেন করা হয়?

 

লিখেছেন 💎 আবদুল্লাহ আল মাসুম

 

 

 

মহাপুরুষদের হত্যা করার প্রচলন আছে পৃথিবী জুড়ে।

পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ভালো জিনিসগুলো বেড়ে উঠলে, বা দীর্ঘ সংগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হলে, বৃহত কল্যাণের জন্য সাহসী হলে, সমাজের একদল মানুষ সবসময় তা রুখে দেয়ার চেষ্টা করে। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এমন কি তাকে হত্যা করে।

মহাপুরুষরা সত্যের,নীতির ও মঙ্গলের পথ অবলম্বন করলে, কিছু প্রতারক, অসত, সুবিধাবাদী, স্বার্থপর, বেঈমান,হিংসুটে, প্রতিদ্বন্দী ক্ষমতালোভী লোকদের গায়ে ফোসকা পড়ে। তখন তারা চক্রান্ত, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর দাত মোবারক শহীদ হয়েছে। খোদ মক্কার লোকদের আঘাতে৷ তাকে, পাগল অভিহিত করে হাসির পাত্র করা হয়েছে।

খ্রীষ্টান ধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রীষ্টকে ক্রশবিদ্ধ করে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে৷

যীশু খ্রীষ্ট

মহান দার্শনিক সক্রেটিস বলেছিলেন,জনগনের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা আছে। ততকালীন সরকার ভয়ংকর চাপ প্রয়োগ করে ও সত্য দর্শন থেকে সক্রেটিস কে নড়াতে পারেন নি। পৃথিবীর শতাব্দী শ্রেষ্ঠ মহত্তম দার্শনিক সক্রেটিসকে হেমলক পান করে মৃত্যুবরনে বাধ্য করা হয়েছে ৷

মহাত্মা গান্ধীর মতো আন্তর্জাতিক বিরল মহত্তম নেতাকে ব্যক্তিগত দেহরক্ষীর গুলিতে মৃত্যুবরন করতে হয়েছে৷

মহাত্মা গান্ধী

ইউএস এর ২০ ও ২৫ তম প্রেসিডেন্ট James Garfield এবং William McKinley,অষ্ট্রিয়-হ্যাংগেরিয়ান রাজা Archduke Franz Ferdinand, ইউএস মন্ত্রী ও সমাজ নেতা Martin Luther, গনতন্ত্রের প্রবক্তা, ইউএস এর ১৬ তম ও ৩৫ তম প্রেসিডেন্ট Abraham Lincoln

আব্রাহাম লিংকন

John F. Kennedy, Alexander the Great died in June 323 B.C. at age 32.অনেক ঐতিহাসিক বলেন তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে৷ অনেকে বলেন তাকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে৷ দ্বিতীয়টি সত্য, কারন, এ বয়েসে বিনা কারনে স্বাভাবিক মৃত্যুর সম্ভাবনা নেই।

Jhon.f.kennedy

মহাবীর, দেশপ্রেমিক সাদ্দাম হোসেনকে যখন হত্যা করা হয়, আমেরিকান সৈন্যরা কাঁদছিলেন আর ইরাকের জনতা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ জুলুৃম করছিলো লাশের ওপর, তার বাড়ীর ফার্নিচার লুট করছিলো ।

বাঙলি জাতির পিতা, স্বাধীনতা যুদ্ধের আসল নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরকে সপরিবারে মর্মান্তিক ভাবে হত্যা করা হয়েছে,সেই কালো দিন ১৫ আগষ্ট। ৷ সমগ্র জাতি, নীরব ছিলো। একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয় নি। একটি শোক সভা হয় নি৷ বীর বাঙালি জাতির এ কাপুরুষিচিত আচরন শুধু নয়। এ আচরনের পেছনে দীর্ঘকাল ধরে অপপ্রচার করে বাঙালি জাতির মনে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার সম্পর্কে ঘৃনার বীজ মানুষের মনে রোপন করা হয়েছে।

সেই মীরজাফররা কি পৃথিবীর ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাবে কোনদিন? না৷ এরা নতুন নতুন রূপে নতুন ছদ্মবেশে ফিরে আসবে৷ খন্দকার মুশতাক এর মতো বন্ধু বেশেও অনেক সময় পাশে থাকবে। মানুষ চেনা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ। এদেরকে চেনাও যাবে না সহজে। তবে, বিচক্ষণ,সচেতন ব্যক্তিরা কারো সাথে কিছুক্ষণ কথা বললে, সামান্য আন্দাজ ও অনুভব করতে পারেন৷

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান

সঙ্গীতের কিংবদন্তী John Lennon কে বেশ কয়েকবার শুট করে তার একজন মানসিক বিকারগ্রস্থ ভক্ত John David Chapmanগভীর আঘতের কারনে Jhon lenon মৃত্যু বরন করেন।

John Lennon

জিনিয়াস ইটালিয়ান ফ্যাশন ডিজাইনার Gianni Versace কে হত্যা করে। Cunanan। হত্যাকারী, কয়েকদিন পর নিজেও আত্মহত্যা করে মারা যায়।

Gianni Versace

Sharon Tate ছিলেন ৮ মাসের অন্তস্বত্বা৷ স্বামী ছিলেন চিত্র পরিচালক Roman Polanski,৮ আগষ্ট ১৯৬৯ এ রোমান এর শিশুসহ হত্যা করে Charles Manson এর অনুসারীরা।

sharon tate & Roman polanski

প্রখ্যাত গীতিকার, কন্ঠশিল্পী Gaye কে পারিবারিক বিতর্ককে কেন্দ্র করে হত্যা করেন তার আপন পিতা৷

বাংলাদেশের তারকা সাংবাদিক দম্পতি সাগর রুনীকে হত্যা করা হয়েছে, এখন পর্যন্ত হত্যাকারীর পরিচয়ও জাতি জানতে পারে নি।

Gaye

এ ধরনের হত্যাগুলো কেন হয়ে থাকে? মনস্তাত্বিক, ঐতিহাসিক, সামাজিক,রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিচার বিশ্লেষন করলে কিছু কারন পাওয়া যায়

১.ক্ষমতা দখলের লড়াই ২.চরম হিংসা ও ঈর্ষা ৩.অপপ্রচার ৪.ধর্মান্ধতা ৫.মানসিক বিকার গ্রস্থতা ৬.পারিবারিক দ্বন্দ ৭.অবিচার, অন্যায় ৮. ঘৃন্য মানসিকতা নিয়ে বড় হওয়াও একটি কারন। ৯.শিল্প,সাহিত্য,সঙ্গীত খেলাধূলা,প্রকৃত ধর্ম চর্চা বিহীন লোকেরাই প্রতিটি খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলো ৯০% ক্ষেত্রে। ১০.Hate crime বলে একটি কথা আছে। কোনো কারনে খুনীর মনে ঘৃণার উগ্র বীজ রোপন করা হয়েছে৷

যুগে যুগে মানুষ, তাদের সম্পদকে কদর করার বদলে কতল করার ইতিহাস আছে পৃথিবী জুড়ে। মানুষকে অনেক ভালোবাসার পুরষ্কার হিসেবে তাকে বিনিময়ে হত্যা করার বিধান প্রচলন আছে। পৃথিবী কি এরকম কালো থাবা কোনোদিন মুক্ত হতে পারবে? না কি, সৃষ্টির অন্ত অবধি এরকম ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ডগুলো ঘটতেই থাকবে?

পৃথিবী নির্মম হলেও আমাদের সদয় হওয়া শিখতে হবে। তবেই, পৃথিবীর থেকে আপনার মাথাটা উচু হবে। নিজেকে পর্যবেক্ষন করলে দেখতে পাবেন, অনেক ভালো কিছু আপানকে আলোড়িত করলেও আপনি সাধারন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সামান্য লাইক, কমেন্ট শেয়ার এড়িয়ে যান। নিজেকে প্রশ্ন করলে, চমকে যাবার মতো উত্তর পাবেন, যে, আপনি ঈর্ষান্বিত। হিংসা, ঈর্ষা, এতো বড় একটি অপগুন যে, কখনো তা হত্যার মতো অপরাধকেও উস্কে দিতে পারে।

আমরা সকলেই সেসব খুনী হত্যা কারীদের ঘৃণা করি। তারা যেসব অপগুনে আবৃত তা আমাদের ভেতর যেনো বিন্দুমাত্র ঠাঁই না পায়, যেনো সচেতন থাকি৷

নিজেদেরকে সচেতন ভাবে মুক্ত করি, ঈর্ষা, হিংসা, প্রতিশোধ পরায়নতা, hate crime, অপপ্রচারের স্বীকার হওয়া থেকে, ক্ষমতার লড়াই থেকে বা ব্যক্তি স্বার্থের জন্য জাতির হৃদয়কে হত্যা করার জঘন্য অপরাধের মতো ঘৃন্য কিছু থেকে।

আমাদের প্রতিদিন আরো বেশী সুন্দর মানুষ হওয়া শিখতে হবে। পৃথিবীর কদর্য রূপ আমরা দেখতে চাই না৷ আমরা দেখতে চাই, পৃথিবী হবে, শান্তিময় স্বর্গের মতো৷

🌎 the Abdullah al masum

কবি, দার্শনিক, বিশ্ব মানবতাবাদী নেতা, সমাজ সংস্কারক ও চমকপ্রদ আইডিয়া স্রষ্টা ও উদ্যোক্তা

Back To Top